Sunday, September 22, 2019

শিক্ষার আলো নাকি ঘরে ঘরে জ্বলবে, আমাদের ঘর নাই সে কথা কে বলবে ???


      #আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় সবকিছুর পরিবর্তন হলেও মানবিকতা বা মানবতা বোধ উন্নত হচ্ছে না৷ শিশুরা দুর্বল বলে স্বার্থ আদায়ের জন্য তাদের নির্যাতন এবং হত্যা করা হচ্ছে৷ আমাদের মূল্যবোধের চরম অবক্ষয় ঘটেছে ৷ আর এর সঙ্গে কাজ করছে বিচারহীনতা ৷ মানুষ এক ধরনের ‘কর্পোরেট কালচার'-এর প্রভাবে স্বার্থের জন্য যে কোনো কিছু করছে ৷ কঠোরভাবে আইন প্রয়োগের মাধ্যমে এর পরিবর্তন আনতে হবে ৷ পুলিশকে শিশুবান্ধব হতে হবে ৷ শিশুবান্ধব হতে হবে সমাজ এবং সমাজের মানুষকে ৷ তা না হলে পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হবে না৷''

     #আজকের শিশু আগামীর ভবিষ্যত । কিন্তু আমরা কথায় বলি কাজে করি না । আমাদের মূর্খতা, নীচু মনের মানসিকতা এসবের উর্ধ্বে উঠতে পারছে না।

     #সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মধ্যে বৃহৎ অংশ পথশিশু । এসব শিশুদের মধ্যে ৭৮ ভাগের জন্ম পথে নেই জীবনের নিশ্চয়তা । ৮৭ ভাগ শিশু বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত জীবন-জীবিকা পথেই । এসব শিশুদের বেড়ে ওঠার ক্ষেত্রে আছে নানা বিড়ম্বনা । বেঁচে থাকার নিশ্চয়তার জন্য অপরাধী চক্র নানা অপকর্মে পথশিশুদের ব্যবহার করছে । এসব শিশুদের মৌলিক চাহিদার নেই কোন নিশ্চয়তা । শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত এসব শিশু ।

    #শিশুদের অনেক সমস্যার অন্যতম হচ্ছে যৌন নির্যাতন। দিন দিন কন্যা শিশুদের ধর্ষণ ও নির্যাতনের হার বাড়ছে। এতে শিশুদের মানসিক ও শারীরিক বিকাশে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে। শিশুরা জানে না কোন স্থানটি তাদের জন্য নিরাপদ কিংবা নিষিদ্ধ। অনেক সময় মনের অজান্তেই অপরাধ করে যাচ্ছে তারা। আবার কোন কোন ক্ষেত্রে জেনেশুনেই অপরাধের পথে পা বাড়াচ্ছে কোমলমতি শিশুরা। পারিবারিক অসচ্ছলতা, অশিক্ষা, অনিরাপদ অবস্থান, যথাযথ তত্ত্বাবধানের অভাবে শিশুরা অল্প বয়সেই যৌন নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। একারণে মরণব্যাধি এইডস সহ নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। কমছে গড় আয়ু। শিশু সুরক্ষার আছে জাতীয় আন্তর্জাতিক আইন। আছে সরকারী বেসরকারী পর্যায়ে বিভিন্ন প্রকল্প। বস্তুত এসব অসহায়, দরিদ্র শিশুদের উন্নয়নে এই প্রকল্পগুলো ইতিবাচক কোন প্রভাব বিস্তার করতে পারছে না।

        #শিশুদের অধিকার, শিশু নির্যাতন তথা খারাপ কাজ থেকে রক্ষা করা বা সুন্দরভাবে বেড়ে উঠার জন্য, অবহেলা রোধ করার জন্য, শিশু উন্নয়নের জন্য আইন রয়েছে। শুধু সমস্যা: যথাযথ প্রয়োগে । শিশুর জন্মের জন্য যেমন আমাদের দায় আছে তেমনি শিশুর জীবনের নিরাপত্তা, তার সঠিকভাবে বেড়ে ওঠা, তার লালন পালন ও সবরকম দেখভাল করার দায়িত্ব পরিবারের, সমাজের সকল প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ। একজন প্রাপ্তবয়ষ্ক মানুষ হিসেবে, একজন মা কিংবা বাবা হিসেবে একটি শিশুকে নির্মম নির্যাতন, মা বাবা কর্তৃক নিজ সন্তান হত্যা আমাদেরকে লজ্জিত করে । শিশু অধিকার লংঘন কমাতে হলে প্রয়োজন সঠিক আইনের প্রয়োগ এবং যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ। শিশু হত্যা এবং নির্যাতনের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

     #আমরা চাই আর কোন শিশু যাতে নির্যাতন নিপীড়নের শিকার না হয়। সকল শিশুদের সম-অধিকার বাস্তবায়নে সামাজিক ও পারিবারিক বন্ধনকে আরো জোরদার, স্কুল পর্যায়ে কাউন্সিলিং, সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ছাড়াও সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোকে আরো সচেতনতামূলক কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। শিশুদের ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে তাদের কল্যাণে এবং শারীরিক ও মানসিক বিকাশ ত্বরান্বিত করতে সবার আগে তাদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।

   #শিশুরা দেশ ও রাষ্ট্রের সেরা সম্পদ । শিশুদের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত পূর্বক সুনাগরিক হিসাবে গড়ে তোলার দায়িত্ব আমাদেরই , সর্বোপরি প্রাচ্যের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ।

    #কারণ বর্তমান সময়ে দেখা যাচ্ছে মা-বাবার কাছেও সন্তান নিরাপদ নয়। ঠুনকো কারণে যত্রতত্র শিশুদের প্রাণ চলে যাবে কিংবা তারা আনন্দ করতে গিয়ে আহত হবে, নিহত হবে, এরকম খবর যেন আমাদের https://m.facebook.com/story.php?story_fbid=10215161367608462&id=1260656857আর পড়তে কিংবা দেখতে না হয়। অনস্বীকার্য যে, মানবিকতা চর্চার বিষয়টি সমাজ থেকে প্রায় উঠে গেছে।

      #শিশুদের নিরাপত্তা যদি নিশ্চিত করা না যায় এবং রাষ্ট্র যদি তাদের মেধা বিকাশে ও নিরাপত্তাদানে কার্যকর পদক্ষেপ না নেয় তবে তা দেশের ভবিষ্যতের জন্যও হুমকিস্বরূপ । আমরা চাই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা আর কোন শিশুহত্যার খবর যেন আমাদের শুনতে না হয়। শিশুরা সুন্দর ভবিষ্যত গড়বে, গড়বে নতুন দেশ এই প্রত্যাশাই করি।

ছবির স্থান : TSC, University of Dhaka
সময়: 07:48 PM.